মঙ্গলবার, নভেম্বর ০৩, ২০০৯

কক্সবাজারের হালনাগাদ ভোটার তালিকাতেও ১৫ হাজার রোহিঙ্গা

কক্সবাজারের চার উপজেলা—সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফে সদ্য সমাপ্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকাতেও মিয়ানমারের অনুপ্রবেশকারী ১৫ হাজার রোহিঙ্গা অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এখন রোহিঙ্গাদের বাদ দিয়ে পুনরায় হালনাগাদ ভোটার তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, হালনাগাদ ভোটার তালিকায় ওই চার উপজেলায় নতুন ভোটার হয়েছেন ৪৩ হাজার ৬৭২ জন। এর মধ্যে রামুতে ১০ হাজার ৭৭১, সদর উপজেলায় ১৫ হাজার ৫১৩, উখিয়ায় নয় হাজার ৫০৯ ও টেকনাফে সাত হাজার ৮৭৯ জন। শতকরা হিসেবে রামুতে আট দশমিক ৮৬, সদর উপজেলায় সাত দশমিক ৬৬, উখিয়ায় নয় দশমিক ৯২ ও টেকনাফে সাত দশমিক ০৩ ভাগ ভোটার বেড়েছে।
সারা দেশে হালনাগাদ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির শতকরা হার চার ভাগ। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা এ হালনাগাদ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এ অবস্থা বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। সূত্রমতে, চার উপজেলায় অন্তত ১৫ হাজার রোহিঙ্গা হালনাগাদ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
সরেজমিন কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে খোদ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন জানান—সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফে যে হালনাগাদ ভোটার তালিকা হয়েছে তাতে শতকরা ৩০ ভাগ রোহিঙ্গা। এদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য তিনি দায়ী করলেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাংসদসহ প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতা, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের। আইনের আওতায় পুনরায় রোহিঙ্গামুক্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকা তৈরির আশ্বাস দেন তিনি। তিনি জানান, যতদিন হালনাগাদ ভোটার তালিকা তৈরি হবে না, ততদিন ইউনিয়ন পরিষদসহ সব স্থানীয় নির্বাচন বন্ধ থাকবে। গত ১৮ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন ঢাকা থেকে কক্সবাজার এসে রামু, সদর, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা পরিদর্শন করে হালনাগাদ ভোটার কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। এসময় তিনি বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে নানা উপায়ে ভোটার করার অভিযোগের প্রমাণ পান। তিনি রোহিঙ্গামুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন ওইদিন সন্ধ্যায় শহরের হিলডাউন সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের কাছে কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, হালনাগাদ ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাই করে রোহিঙ্গাদের বাদ দেওয়ার পর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন।
নির্বা্চন কমিশনার বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের ভোটব্যাংক বাড়াতে রোহিঙ্গাদের এদেশের নাগরিক হিসেবে সনদ দিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায়।
এ সময় উপস্থিত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম জানান, চার উপজেলায় শিগগির শুদ্ধি অভিযান শুরু করা হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রধান করে ১৫ সদস্যের একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হচ্ছেন সদস্যসচিব। কমিটি যাচাই-বাছাই করার পর হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
(সৌজন্যে: প্রথম আলো, ২২ অক্টোবর ২০০৯)

কোন মন্তব্য নেই: